তীব্র হয়ে উঠছে তিস্তার ভাঙন
তিস্তার ভাঙন রোধে স্থায়ী কোন ব্যবস্থা না থাকায় পানি বৃদ্ধি ও কমার সঙ্গে সঙ্গেই তীব্র হয়ে উঠছে ভাঙন। এতে করে এ বছর ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি হারিয়েছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার। দেবে গেছে বুড়িরহাটের তীররক্ষা আরসিসি সলিড স্পারের ৩০ মিটার। কয়েক বছর ধরে এ অবস্থা চললেও তিস্তার স্থায়ী ভাঙন রোধে মহাপরিকল্পনা আর সমীক্ষার মধ্যেই আটকে আছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ভাঙনে নদীতে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও গাছপালা।
বৃষ্টির আর উজানের ঢলে তীব্র স্রোতে বইছে তিস্তার পানি। একের পর এক স্রোতের আঘাতে রাজারহাটের বুড়িরহাট এলাকায় দেবে গেছে তীর রক্ষা আরসিসি সলিড স্পার। এতে করে হুমকিতে পড়েছে উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম। সলিড স্পারের বাকি অংশ রক্ষা করা না গেলে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা স্থানীয়দের।
অন্যদিকে নদীর দুই পাড় জুড়ে ভাঙন অব্যাহত থাকায় ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতে দিশা পাচ্ছেন না মানুষজন। ভিটে মাটি হারানো পরিবারগুলো তাদের শেষ অবলম্বনটুকু রক্ষা করে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলেও মিলছে না স্থান। এ অবস্থায় তিস্তার ভাঙন রোধের জোর দাবি জানান তারা।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের বুড়িরহাট এলাকার মমিন জানান, স্পারের অর্ধেক দেবে যাওয়ার ফলে ফলে বামতীরে আঘাত হানতে শুরু করেছে তিস্তার পানি। এরই মধ্যে ইউনিয়নের খিতাবখা, বড়দরগাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে।
খিতাবখা বড় দরগা এলাকার সামছুদ্দিন জানান, কয়েকদিনের ভাঙনে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। ঘর সরিয়ে অন্যের জায়গায় রেখেছি। কোথাও জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। নদীর কাজ না করায় তাকে নিঃস্ব হতে হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিস্তার ভাঙনের বিষয়ে উত্তরাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে এসে জানান, সর্বস্ব দিয়ে হলেও আরসিসি সলিড স্পারের বাকি ৩০ মিটার রক্ষা করা হবে। পাশাপাশি রংপুরের জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজও চলমান রয়েছে। আশা করছি, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে তিস্তা পাড়ের মানুষের আর কোন কষ্ট থাকবে না।
জেলার রাজারহাট, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার ওপর দিয়ে ৪২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে তিস্তা নদী।
0 coment rios: